হনুমান চালিশা হল ভগবান হনুমানের উদ্দেশ্যে, হনুমানজির পবিত্র গুনোগান । ১৫ শতাব্দীর বিখ্যাত কবি তুলসীদাস হনুমান চালিশাটি রচনা করেছিলেন আবাধি ভাষায়। কবি তুলসী দাস রামচরিতমানসও রচনা করেছিলেন এবং প্রভূত খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। চালিশা শব্দটি হিন্দি শব্দ চাল্লিশ থেকে গৃহীত। হনুমান চালিশাটি দ্বিপদী শ্লোক এ লেখা। এটি মোট ৪৩ টি ভাগে বিভক্ত যার মধ্যে সূচনায় দুটি দোহা, ৪০ টি চৌপাই এবং একটি দোহা শেষে অবস্থান করেছে।
হনুমান চালিশা শুরুতে কবি দোহাটি শুরু করেছেন
শ্রী গুরুচরণ সরোজ রজ, নিজ মনু মুকুর সুধারী।
বরণউ রঘুবর বিমল জসু, জো দায়কু ফল চারি।।
অনেকেই hanuman chalisa bengali pdf আকারে সেভ করে রাখতে চান তাই, তাই বাংলায় হনুমান চালিশার একটি pdf নিচে দেওয়া হল ।
Click to Download hanuman chalisa bengali pdf
কবি তুলসীদাস এখানে হনুমানজিকে “জ্ঞান ও গুণের সাগর” বলে অভিহিত করেছেন, যা তাকে সাধারণ মানুষ থেকে আলাদা করে। সাধারণত জ্ঞানীরা অহংকারে ভোগেন, তবে হনুমানজি সেই অহংকার থেকে মুক্ত। তিনি সুমিষ্ট ভাষায় কথা বলেন, যা ভগবান রাম প্রথমবারে তার কথায় উপলব্ধি করেছিলেন। হনুমানজি সূর্যদেবের কাছে জ্ঞান অর্জন করতে গিয়ে বিনয় ও আত্মসমর্পণের আদর্শ উদাহরণ স্থাপন করেন। শিক্ষাশেষে, গুরুদক্ষিণা হিসেবে সূর্যদেবের পুত্র সুগ্রিবের সমস্ত দায়িত্ব গ্রহণ করে হনুমানজি তার নিঃস্বার্থতা প্রমাণ করেন। এজন্যই তাকে বলা হয়, “জয় হনুমান, জ্ঞান গুণ সাগর।”
‘রামদূত’ অর্থ হলো হনুমানজি ভগবান রামের প্রিয় ভক্ত ও সেবক। ‘অতুলিত বল ধামা’ বলতে বোঝায় যে তার অপরিসীম শক্তি ছিল, যা রামের প্রতি তার নিবিড় ভক্তির ফল। তিনি ভগবান রামকে হৃদয়ে ধারণ করতেন, যা তাকে অতুলনীয় শক্তির অধিকারী করে তুলেছিল।
হনুমানজির মা ছিলেন অপ্সরা পুঞ্জিকাস্থলা, যিনি আধ্যাত্মিক মননের অধিকারিণী ছিলেন। একবার গুরু বৃহস্পতি তাঁর কাছ থেকে একটি রুদ্রাক্ষমালা পেয়ে খুশি হয়ে ভুলবশত আশীর্বাদ দেন যে তিনি একটি গুণসম্পন্ন সন্তানের মা হবেন। পরে তিনি বুঝতে পারেন অপ্সরারা সন্তানের মা হতে পারেন না। ভুল সংশোধনের জন্য পুঞ্জিকাস্থলাকে ঋষি দুর্বাসার সেবায় নিয়োগ করা হয়। দুর্বাসা ছিলেন বদমেজাজি, এবং তার সামান্য ভুলে রেগে গিয়ে তাকে বানর হয়ে জন্মানোর অভিশাপ দেন। এভাবেই পুঞ্জিকাস্থলা অঞ্জনা রূপে জন্মগ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে কেশরীর সাথে বিবাহিত হন। সন্তানের জন্য দীর্ঘদিন প্রার্থনার পর, অযোধ্যায় রানীদের সন্তান লাভের যজ্ঞে পায়েসের কিছু অংশ ঈগলের মাধ্যমে অঞ্জনার কাছে পৌঁছে যায়। পবনদেব তা উড়িয়ে নিয়ে অঞ্জনাকে দেন, এবং সেখান থেকে হনুমানজির জন্ম হয়।
এই কারণেই হনুমানজিকে বলা হয় কেশরীনন্দন, অঞ্জনীপুত্র, এবং পবনপুত্র।